চলছে অপারেশন ডেভিল হান্ট, সারাদেশে কঠোর অবস্থানে যৌথবাহিনী!
সারাদেশে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ নামে একটি বিশেষ অভিযান শুরু করেছে যৌথবাহিনী। শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০টার দিকে সারাদেশে একযোগে অভিযান শুরু হয়।
এর আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখতে এবং সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনতে যৌথবাহিনী এই অভিযান পরিচালনা করছে।
শুক্রবার রাতে গাজীপুরে সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের নাটক সাজিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের ডেকে নিয়ে হত্যাচেষ্টা চালায় নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। অভিযোগ রয়েছে, এ সময় তাদের সঙ্গে যুবলীগ ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও অংশ নেন। এতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ২০ নেতাকর্মী গুরুতর আহত হন। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলোর সমন্বয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয় এবং বিশেষ অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ বিভাগের পরিচালক ফয়সল হোসেন জানান, ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’-এর বিস্তারিত তথ্য রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে জানানো হবে।
এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গাজীপুর জেলা সমন্বয়ক আব্দুল্লাহ আল মাহিম বলেন, আ ক ম মোজাম্মেল হকের ধীরাশ্রমের বাড়িতে লুটপাটের খবর দিয়ে পরিকল্পিতভাবে তাদের ঘটনাস্থলে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে মাইকে ঘোষণা দিয়ে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। এতে কমপক্ষে ২০ জন গুরুতর আহত হন।
এদিকে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া জানান, পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্র এখনও উদ্ধার হয়নি, এবং সেগুলো জনগণের বিরুদ্ধে ব্যবহারের চেষ্টা চলছে। তাই অস্ত্র উদ্ধারে যৌথ বাহিনী অভিযান শুরু করবে।
তিনি বলেন, লাইসেন্সধারী বেশিরভাগ অস্ত্র পুলিশের কাছে জমা হলেও লুট হওয়া অস্ত্রের বড় অংশ এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে, পরাজিত ফ্যাসিবাদী শক্তি দেশে অস্ত্র প্রবেশ করানোর মাধ্যমে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে চেষ্টা করছে। এই কারণে অস্ত্র উদ্ধারে যৌথ বাহিনী অভিযান আবার শুরু করবে।
আসিফ মাহমুদ বলেন, পরাজিত কোনো শক্তি যদি জনগণের জন্য হুমকি হয়ে ওঠে, তবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে এই অভিযানের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
অপরদিকে হামলার ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে গাজীপুর সদর থানার ওসিকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন মহানগর পুলিশের কমিশনার নাজমুল করিম খান। তিনি বলেন, ‘শুক্রবার রাতের ঘটনার জন্য পুলিশ বাহিনীর পক্ষ থেকে আমি ক্ষমা চাচ্ছি। আমি ব্যর্থতা স্বীকার করি। হামলাকারী কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না, প্রতিটি হামলার জবাব দেওয়া হবে। যেসব পুলিশ রেসপন্স করতে দেরি করেছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নাজমুল করিম খান আরও বলেন, ‘আমি শুনেছি, আমার ওসি দুই ঘণ্টা পর সাড়া দিয়েছেন। তাকে সাসপেন্ড (বরখাস্ত) করা হবে। যারা এই ফ্যাসিবাদের সঙ্গে আঁতাত করেছে, তাদের পুলিশে চাকরি করতে দেওয়া হবে না।
0 Comments